৫ আগস্ট একদফা দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে গণমিছিল
অবৈধ সরকারের পতনে একদফা
দাবিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে
বিক্ষোভ সমাবেশে মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, সরকারের নির্দেশে সকল বাহিনী নামিয়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে, লাখো মানুষের রক্ত ঝড়িয়েছে, হাজার হাজার বাচ্চা এতিম, অনেককে বিধবা, পঙ্গু, অন্ধ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ অসহায় যন্ত্রণায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। মানুষ ঘরে থাকতে পারছে না। ঘরে থেকেও গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, বাচ্চারা খেলতে পারছে না গুলিবিদ্ধ হচ্ছে। ছাদে গেলেও গুলি, বাসায় জানালা দিয়েও গুলি। এ সরকার রক্তের নেশায় মত্ত হয়ে উম্মাদ হয়ে গেছে। বাসা-বাড়ীতে থাকতে পারছে না পুলিশ গ্রেফতার করছে। অনেক বাবা, ভাই লাশ গ্রহণ করতে পারছে না পুলিশ ও সরকারের সন্ত্রাসীদের ভয়ে। এজন্য শত শত লাশ বেওয়ারিশ দাফন করা হয়েছে। সরকার জনগণের মন থেকে শান্তি কেড়ে নিয়ে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আমরা আর একটা খুন চাই না, গুলি চাই না। যদি গুলি চালানো হয় জনগণ গণভবন অভিমুখে মিছিল নিয়ে ঘেরাও করতে বাধ্য হবে। তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে সরকার পতন আন্দোলনে সকলকে নেমে আসার আহ্বান জানান। মুফতী ফয়জুল করীম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সকল কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, ইসলামী আন্দোলন শুরু থেকে এ আন্দোলনের পাশে ছিলো, আছে, থাকবে। মুফতী ফয়জুল করীম আগামি ৫ আগস্ট এক দফা দাবিতে ঢাকায় গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এছাড়াও সারা দেশে জেলা ও মহানগরে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার গণমিছিলে নেতৃত্ব দিবেন দলের আমীর হযরত পীর সাহেব চরমোনাই।
[embad]https://www.youtube.com/watch?v=mKjKLNrj2Yw[embad]
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাৎক্ষণিক এক মিছিল উত্তর সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলের কথা থাকলেও তা বিশাল জনস্রোতের সৃষ্টি হয়। প্রচন্ড বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে একটি বিশাল মিছিল মুফতী ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে পল্টন মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হোন। সেখানে বক্তব্য শেষে পুনরায় মিছিলটি কদম ফোঁয়ারা হয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে পুনরায় প্রেসক্লাব, পল্টন মোড়, বিজয়নগর নাইটেংঙ্গেল হয়ে পুরানা পল্টন মোড়ে এসে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের। কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, যুবনেতা মাওলানা নেছার উদ্দিন ছাত্রনেতা নুরুল বশর আজিজী।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন শুধু ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এ আন্দোলন জনগণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এ আন্দোলন বাচার আন্দোলন, অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, জালিমের কবল থেকে মজলুমের মুক্তির আন্দোলন। এখন সর্বত্র একই আওয়াজ খুনি হাসিনার পদত্যাগ। খুনি সরকার লিয়াজু করে আন্দোলন দমাতে চাইলে জনগণ তা প্রত্যাখান করবে। জনগণের সেন্টিমেন্ট উপলব্ধি করে যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতা ছাড়বে ততই জাতির জন্য কল্যাণকর হবে।
দেরি না করে জনরায় মেনে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, হত্যা-নির্যাতন করে গদি রক্ষা করা যাবে না। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সারা দেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে। মুফতী ফয়জুল করীম সারা দেশের ত্বলাবা, ওলামা, শ্রমিক-জনতা, প্রশাসনের কর্মচারি, কর্মকর্তা,ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বস্তরের জনগণকে আন্দোলনে নেমে আসার আহ্বান জানান। সরকারের বিরুদ্ধে জনরায় ঘোষণা করেছে। এটি উপেক্ষা করার পরিণাম হবে ভয়াবহ। তাই আর কালবিলম্ব না করে সরকারকে পদত্যাগ করে গণরায় মেনে নিতে হবে। স্বৈরাচারী ব্যবস্থার অবসান ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।