ঢাকা ২৬ আগষ্ট ২০২৪
২৫শে আগষ্ট আরেকটি প্রতিবিপ্লব রুখে দিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা।
আনসারের মত একটা প্রশিক্ষিত প্যালামিলিটারী বাহিনী কিভাবে সাহস করে রাজপথে প্রতিবিপ্লবের মতো ঘটনা ঘটাবার? কারা এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছে। আনসারের সদ্য সাবেক ডিজি মে.জে. আমিনুল হক। এই আমিনুল হক হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি, সাবেক জাকসু ভিপি, সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইনামুল হক শামীমের বড় ভাই। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকার এই আমিনুল হককে দিয়ে গ্রামগন্জের সব ছাত্রলীগের কর্মী-সন্ত্রাসীদের আনসার বাহিনীতে নিয়োগ করেছে। সচিবালয়সহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানের বেষ্টনির নিরাপত্তার মুল দ্বায়িত্যে থাকে আনসাররা। আনসারদের একটা অংশ পুলিশের সাথে থানায় যুক্ত থাকে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের সাথে সাদা পোশাকে (সাদা শার্ট) পুলিশের ভেষ্ট পরে যারা ছিল তাদের একটা বড় অংশ এই আনসারের সদস্য যারা সবাই সামরিক কায়দায় প্রশিক্ষিত এবং বেসামরিক বাহিনী হিসাবে বিজিবি ও পুলিশের পরেই এদের অবস্হান। এরকম একটা বাহিনীর সব সৈনিকই আওয়ামী লীগ কর্তৃক বাছাইকৃত। পুলিশের সাথে এরাও ছাত্র-জনতাদের এই আন্দোলনে উন্মাদেরমত হত্যা করে।
প্রায় ২০,০০০ আনসার আজকে সচিবালয়ের সব গেট
বন্ধ করে সব মাননীয় উপদেষ্টা, মাননীয় সিনিয়র সচিব, মাননীয় সচিবগণসহ সচিবালয়ের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের দাবী আজকের মধ্যে তাদের চাকুরি জাতীয়করন করতে হবে ও ৩ বছর পরপর যে ৬ মাসের বাধ্যতামুলক ছুটিতে থাকতে হয় সেসময় তাদের বেতন প্রদান করতে হবে। তারা যেসব বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকে সেখান থেকে সরকার নির্ধারিত (এলাকা হিসাবে) যে সার্ভিস চার্জ (বেতন আকারে) আসে তার উপর আনসার কর্তৃপক্ষ যে ২০ শতাংশ কর্তন করে, সেই ২০ শতাংশ কর্তন না করে পুরোটাই প্রদান করতে হবে।
তারা খুবভালো করেই জানে যে দাবীসমূহ গৃহীত হতে হলে স্বরাষ্ট মন্ত্রানালয় দাবীগুলো আন্ত মন্ত্রনালয়গুলোতে বৈঠক করে তারপর জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারী হলে তা রাষ্ট্রীয় আইনে পরিনিত হয়। কিন্তু তাদের দাবী ছিল আজকেই সব করে দিতে হবে। যখন আনসারদের ১৭ জন সমন্য়করা দুপুরে স্বরাষ্ট উপদেষ্টার সাথে সচিবালয়ে বৈঠক করে এবং তাদের অনেক দাবীও মেনে নেয়া হয় (বিশেষ করে জাতীয়করন) ও আগামীকাল থেকেই কাজ শুরু হবে তখন সমন্য়করা সচিবালয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষনা দিয়ে নিচে গেলে দৃশ্যপট বদলিয়ে যায়। তারা ঘোষনা দেয় কাউকে সচিবালয় থেকে বের হতে দেয়া হবে না। তখনই ষড়ষন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যায়। উদ্দেশ্য ছিল সচিবালয় সারারাত অবরুদ্ধ করে সব উপদেষ্টা ও সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের জিম্মি করে এই সরকারকে আগামীকাল সকালে উৎখাত করা। প্রশ্ন হলো তাহলে এতগুলো গোয়েন্দা সংস্থা কি করলো?
উপদেষ্টা জনাব নাহিদ এই অবস্থা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আহ্বান করে এই জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করার জন্য। তখন হাজার হাজার ছাত্ররা দৌড়ে সচিবালয়ে চলে আসে। ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে হাজার হাজার জনতা ওর সাথে যুক্ত হন। একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে আনসারদের থেকে ছাত্রদের উপর গুলি করা হয়।
প্রশ্ন হলো, পুলিশ কেন সাথে সাথে আসলো না? এবং সেনাবাহিনী কেন এত দেরী করে আসলো?
আরেকটি প্রতিবিপ্লব আজকে ছাত্র-জনতা সাহসিকতার সাথে প্রতিহত করলো।
ডঃ ইউনুস সাহেব রাষ্ট্রপতি পদ গ্রহন না করা পর্যন্ত এই ধরনের ঘটনাবলী এই ফ্যাসিষ্টরা চালাতেই থাকবে।
লেখক- ম. আরিফ
আগষ্ট ২৬, ২০২৪