ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ মন্তব্য করে সকলকে সজাগ থাকতে বলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার বিকালে বাড্ডায় মহানগর বিএনপির এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে… ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে দেশে-বিদেশে…আপনাদেরকে আবার ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবার জন্যে। আমরা সেটা হতে দেবো না… খুব পরিস্কার কথা।”
আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন, সর্তক থাকবেন। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শেষ হয়নি। সমস্ত ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগনের সরকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই করব ইনশাল্লাহ।”
মির্জা ফখরুল হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘‘ আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকেই দেবো… এই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনটা চাই। আমরা এখনো বলছি, আমরা এখনো রাস্তায় নামি না। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি এই ঈদ সামগ্রি নিয়ে, ইফতার সামগ্রি নিয়ে, তাদের সুখ-দূ:খে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছি।”
কিন্তু আমাদের স্বার্থে যদি, জনগনের স্বার্থে যদি কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয় তাহলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে। মাঠে নেমে তারা দাবি আদায় করে নিতে জানে। আমি কথাটা বলছি এজন্যে যে, আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ খুব পরিস্কার কথা। যেখানেই থাকেন, সেই ইউনাইটেড স্টেটের থাকেন, ফ্রান্সে থাকেন আর আমেরিকায় থাকেন আর সেখান থেকে মানুষকে উত্তেজিত করবার চেষ্টা করেন, বিভাজন সৃষ্টি করবার চেষ্টা করেন।”
আমরা মানুষের সঙ্গে আছি, আমরা মানুষের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি। সুতরাং আমাদেরকে কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না, বাংলাদেশের মানুষকেও কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না।”
‘ভারত-পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য কারোই পক্ষে আমরা নই’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ পরিস্কার কথা। আমরা ভারতের পক্ষেও নই, আমরা পাকিস্তানের পক্ষেও নই… আমরা আমেরিকার পক্ষেও নই, আমরা ইংল্যান্ডের পক্ষেও নই।”
‘‘ আমরা বাংলাদেশের পক্ষে। আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব খুব পরিস্কার করে বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ… আমরা বাংলাদেশী।”
আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন, সর্তক থাকবেন। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শেষ হয়নি। সমস্ত ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগনের সরকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই করব ইনশাল্লাহ।”
‘আল্লাহর হুকুমেই হাসিনার পতন’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ ৯০% নেতা-কর্মীকে জেলে নিয়েছিলো। আমাদের ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সরকার তারা হত্যা করেছিল। প্রায় ১৭ শ নেতা-কর্মীকে গুম করেছি। ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা-গায়েবী মামলা দিয়েছিলো। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এই ধরনের নজির খুব কম।”
সেই একটা অবস্থা আমরা পার হয়ে এসেছি। আল্লাহ তালার কাছে হাজারো শুকরিয়া আদায় করি যে তার অশেষ রহমতে… আমার কাছে মনে হয়, আল্লাহ তালার অশেষ অলৌকিক শক্তি তার মাধ্যমে তিনি হঠা করে একদিন হাসিনাকে যেন গুম করে দিলেন। হাসিনা গুম হয়ে গেছে আল্লাহতালার নির্দেশে। যে অত্যাচার-নির্যাতন তিনি মানুষের ওপরে করেছেন সেখান থেকে আপাতত মুক্তি পেয়ে একটা মুক্ত পরিবেশে একটা জায়গায় আমরা এসে দাঁড়িয়েছি।”
রাজধানীর বাড্ডার মাদানি সড়কে বেরাইদা ঈদগাহ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ৪২নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ উপলক্ষ্যে এই অনুষ্ঠান হয়।
মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তহিরুল ইসলাম তুহিন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিষয়ক সম্পাদক এমএ কাইয়ুম বক্তব্য রাখেন।
এই অনুষ্ঠানে মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর, আখতার হোসেন, আলফাজ উদ্দিন, এজিএম শামসুল হক, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।