ইসলাম এবং মুসলমান নিয়ে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর অবমাননাকর বিবৃতির তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন অব্যাহত রয়েছে আরবসহ সমগ্র মুসলিমবিশ্বে। জোরদার হচ্ছে ফরাসী পণ্য বয়কটের আহ্বান।
বুধবার ম্যাক্রোঁ বলেন, স্বাধীন মত প্রকাশের নীতি অনুযায়ী মহানবী মুহাম্মদ (স.) কে নিয়ে অসম্মানজনক কার্টুন প্রকাশ তিনি বন্ধ করতে পারবেন না। তার এ বিবৃতির পর মুসলিম বিশ্বে তীব্র ক্ষোভ এবং প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।
মিশরের আল-আজহারের গ্র্যান্ড ইমাম শেখ আহমেদ আল-তায়েব ইসলামবিরোধী মন্তব্যকে, রাজনৈতিক লড়াইয়ে ইসলামকে টেনে আনার নিয়মতান্ত্রিক প্রচার বলে অভিহিত করেছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা কখনোই আমাদের প্রতীক এবং পবিত্র স্থাপনাগুলোকে নির্বাচনী লড়াইয়ের সস্তা দর কষাকষির হাতিয়ার হতে দেবো না।
লিবিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের সদস্য মোহাম্মদ জায়েদ ইসলামবিরোধী ম্যাক্রোঁর অসম্মানজনক বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন। বলেন, মহানবীর সম্মান, দুষিত বিবৃতি এবং তুচ্ছ কার্টুন দ্বারা কখনোই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না।
ফ্রান্সের মুসলিমবিরোধী প্রচারণার প্রতিবাদে আবারো ফরাসী পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন ইয়েমেনের ধর্মমন্ত্রী আহমাদ আত্তিয়া।
জর্ডানের মুসলিম ব্রাদারহুড ম্যাক্রোঁর বক্তব্যকে মুসলিম জাতির প্রতি আগ্রাসন, ঘৃণা, বিদ্বেষ এবং বর্ণবাদী বলে আখ্যা দিয়েছে।
মহানবীকে অসম্মান করে কার্টুন পুনঃপ্রকাশ এবং ম্যাক্রোঁর বিবৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায়। সেখানে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। দেশটির জারাবুলুস এবং তেল আবিয়াদ শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে। এসময় প্রতিবাদ জানিয়েছে ম্যাক্রোঁর কুশপুতুল পুড়ানো হয়।
‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। এখানে সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই। সন্ত্রাসবাদের কারিগর ফ্রান্স। তেল আবিয়াদের স্থানীয় কাউন্সিলর ওয়ায়েল হামদু আরো বলেন, আল জেরিয়ায় ১৫ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে ফ্রান্স। সে ইতিহাস আমরা ভুলে যায়নি।
গেলো কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসলাম এবং মুসলমানদের আক্রমণ করে যাচ্ছেন ম্যাক্রোঁ। মুসলমানদের বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দিয়েছেন। ইসলামকে সারাবিশ্বের জন্য সংকট বলেও অভিহিত করেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট।
শার্লি হেব্দোর উস্কানিতে এ পরিস্থিতির সূত্রপাত। কট্টর বামপন্থী ফরাসী ম্যাগাজিনটি ইসলামবিরোধী কার্টুন প্রকাশের জন্য কুখ্যাত। তাদের এ ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডে মুসলিম বিশ্বের তীব্র নিন্দা এবং ক্ষোভের জন্ম নেয়।
চলতি বছরের শুরুতে শার্লি হেব্দো ইসলাম এবং মহানবীকে অসম্মান করে কার্টুন পুনপ্রকাশ করে। ২০০৬ সালে প্রথম ওই কার্টুনগুলো ড্যানিশ পত্রিকা জিল্যান্ডস পোস্টেনে প্রকাশ করা হয়। তখনও বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ এবং নিন্দার ঝড় উঠে।