হালাল জীবিকা মু’মিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ। শারীরিক ও আর্থিক সকল প্রকার ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য পূর্বশর্ত হ’ল হালাল জীবিকা। হালালকে গ্রহণ ও হারামকে বর্জনের মধ্যেই রয়েছে মু’মিনের দুনইয়া ও আখেরাতে সফলতা। আলোচ্য প্রবন্ধে এ বিষয়ে আলোচনার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
হালালের পরিচয়:
হালালের আভিধানিক অর্থ হ’ল বৈধ। পরিভাষায় হালাল ঐ বৈধ জিনিস যা নিষেধাজ্ঞার বন্ধন হ’তে মুক্ত এবং শরী‘আত যে কর্মের প্রতি অনুমোদন দেয়’। হাদীছের ভাষায়:
‘আল্লাহ তাঁর কিতাবে যেসব জিনিস হালাল করেছেন তা হালাল এবং আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে যেসব জিনিস হারাম করেছেন তা হারাম। আর যেসব জিনিস সম্পর্কে তিনি নীরব থেকেছেন তা তিনি ক্ষমা করেছেন’।
হালাল ও হারাম বিষয় জানার হুকুম:
প্রত্যেক মু’মিনের জন্য হালাল-হারাম সম্পর্কে জানা যরূরী। আহমাদ বিন আহমাদ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ বলেন،
‘শরী‘আতের বিধান প্রযোজ্য এমন মুসলিমের জন্য হারাম-হালাল জানা ফরয, যাতে তিনি দ্বীনের ব্যাপারে এমন জাগ্রত জ্ঞানসম্পন্ন হন যেন নিষিদ্ধ বিষয়ে পতিত না হন এবং ইসলামী বিধানের বিরোধিতা না করেন’।
হালাল জীবিকা উপার্জনের গুরুত্ব:
হালাল জীবিকা উপার্জন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন মুসলিম কর্মক্ষেত্রে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, পোশাক-পরিচ্ছদ, খাদ্য, পানীয় সর্বক্ষেত্রে হালালকে গ্রহণ করবে এবং হারাম ও সন্দেহযুক্ত বস্ত্ত থেকে দূরে থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে বলেন,
‘অথচ মু’মিনদের কথা তো কেবল এটাই হ’তে পারে যে, যখন তাদেরকে আল্লাহ ও তার রাসূলের দিকে ডাকা হয় তাদের মধ্যে ফায়ছালা করে দেওয়ার জন্য, তখন তারা বলবে আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। আর এরাই হ’ল সফলকাম’ (নূর ২৪/৫১)।
হালাল জীবিকা গ্রহণ করা ওয়াজিব:
আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য মুসলিম ব্যক্তি হালাল জীবিকা গ্রহণ করবে এবং হারাম উপার্জন থেকে বিরত থাকবে। আর এটাই হ’ল আল্লাহ তা’আলার চূড়ান্ত ফায়ছালা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মানব জাতি! তোমরা পৃথিবী থেকে হালাল ও পবিত্র বস্ত্ত ভক্ষণ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু’ (বাক্বারাহ ২/১৬৮)।
কুরতুবী (রহ.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণের নিম্নোক্ত অভিমত তুলে ধরেছেন-
(১) সাহল বিন আব্দুল্লাহ বলেন,‘নাজাত তিনটি জিনিসে। তাহ’ল ১. হালাল খাবার গ্রহণ করা, ২. ফরয সমূহ আদায় করা এবং ৩. নবী করীম (ছাঃ)-এর অনুসরণ করা।
(২) সাঈদ বিন ইয়াযীদ বলেন- ‘পাঁচটি গুণে ইলমের পূর্ণতা রয়েছে। আর তা হ’ল আল্লাহকে চেনা, হক বুঝা, আল্লাহর জন্য ইখলাছপূর্ণ আমল করা, সুন্নাহ মোতাবেক আমল ও হালাল খাদ্য গ্রহণ করা। আর এর একটি নষ্ট হ’লে আমল কবুল হবে না’।
হালাল জীবিকা ব্যতীত ইবাদত কবুল হয় না:
হালাল রিযক ভক্ষণ ছাড়া আল্লাহ ইবাদত কবুল করেন না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে দেহের গোশত হারাম মালে গঠিত, তা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। হারাম মালে গঠিত দেহের জন্য জাহান্নামই সমীচীন’। তিনি আরো বলেন, ‘হারাম দ্বারা পরিপুষ্ট দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।
ইসলাম হালাল জীবিকার প্রতি উৎসাহ প্রদান করে:
হারাম উপার্জন কেবল ব্যক্তি জীবনকে নষ্ট করে না বরং সমাজ জীবনকেও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এরপরে আখেরাতে ক্ষতি তো আছেই। ইসলামে দুনইয়া ও আখেরাতে ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
▪︎১. হালাল পথে জীবিকা অন্বেষণকারীদের কথা জিহাদের পূর্বে উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,‘কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) সন্ধানে দেশ ভ্রমণ করবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে সংগ্রামে লিপ্ত হবে’ (মুযযাম্মিল ৭৩/২০)।
▪︎২. সলাত সম্পাদন করার পর হালাল জীবিকা তালাশ করার জন্যে যমীনে ছড়িয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘সলাত সমাপ্ত হ’লে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে’ (জুমু‘আহ ৬২/১০)।
▪︎৩. কখনো ফরয ইবাদত সম্পাদনের ক্ষেত্রেও হালাল জীবিকা উপার্জনকে নিষেধ করে না, বরং এতে উৎসাহ প্রদান করে। যেমন হজ্জ সম্পাদনের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করলে তাতে তোমাদের পক্ষে কোন অপরাধ নেই’ (বাক্বারাহ ২/১৯৮)।
ইবনু আববাস (রা.) বলেন: জাহেলী যুগে লোকেরা ওকায ও যুলমাজাযে ব্যবসা-বাণিজ্য করত। কিন্তু যখন ইসলাম আগমন করল তখন তারা হজ্জের সময় এটাকে অপসন্দ করলে আল্লাহ তা‘আলা উপরোক্ত আয়াত নাযিল করেন।
হালাল জীবিকা অর্জনে রাসূল (ছাঃ)-এর উৎসাহ প্রদান :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,‘নিজ হাতে উপার্জিত খাদ্যের চেয়ে উত্তম খাদ্য কেউ কখনো খায় না। আল্লাহর নবী দাঊদ (আঃ) নিজ হাতে উপার্জন করে খেতেন’।
হালাল জীবিকা অবলম্বনের উপায়:
নিম্নোক্ত বিষয়গুলি মেনে চললে হালাল উপার্জন সহজতর হবে:
▪︎১. তাক্বওয়া অর্জন ও পরকালীন জবাবদিহিতার ভয় : কোন মানুষ যদি আল্লাহকে ভয় করে তাহ’লে সে হারাম উপার্জন করতে পারে না। তেমনি কেউ যদি পরকালে আল্লাহর কাছে সকল আমলের হিসাব দিতে হবে এ ভয় করে তাহ’লে সে সর্বতোভাবে হারাম থেকে বেঁচে থাকবে এবং হালাল উপার্জনে সচেষ্ট হবে।
▪︎২. হালাল জীবিকার উপর তুষ্ট থাকা : শরী‘আত সম্মত পথে উপার্জিত রিযিকে সন্তুষ্ট থাকলে হারাম জীবিকা অর্জন থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,‘যদি চারটি জিনিস তোমার মধ্যে থাকে তাহ’লে দুনিয়ার কোন কিছু হারানোর বিষয়ে পরোয়া করবে না। (সে বিষয়গুলি হ’ল) (১) আমানত রক্ষা করা (২) সত্য কথা বলা (৩) সুন্দর চরিত্র এবং (৪) হালাল খাদ্য গ্রহণ করা’।[9]অর্থ হলো ‘মুসলিম অল্পে তুষ্ট থাকবে ও তাকে যথেষ্ট মনে করবে এবং হালাল উপার্জনের মাধ্যমে হারাম থেকে নিজেকে বিরত রাখবে’।
▪︎৩. আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত বণ্টনের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা : ধনী-গরীবের মধ্যকার ব্যবধান আল্লাহ তা‘আলারই ব্যবস্থাপনা। তিনি যাকে খুশী অঢেল সম্পদ দিয়ে থাকেন। এটা মেনে নেয়া তাকদীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আল্লাহ তা‘আলা যাকে যতটুকু সম্পদ দিয়েছেন, এতে সন্তুষ্ট থেকে হারাম জীবিকা উপার্জনের যাবতীয় পথ থেকে দূরে থাকলে হালাল জীবিকা গ্রহণ সহজ হবে। এ দিকে ইঙ্গিত করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের চাইতে নিম্ন মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির দিকে তাকাও এবং তোমাদের চাইতে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্নদের দিকে তাকিও না। আল্লাহর দেয়া অনুগ্রহকে তুচ্ছ মনে না করার জন্যে এটাই উৎকৃষ্ট পন্থা’।
▪︎৪. আল্লাহর উপর ভরসা করা ও হালাল জীবিকার উপর অটল থাকা : আল্লাহ তা‘আলা বলেন ‘তোমরা আল্লাহর উপরই ভরসা কর, যদি তোমরা মুমিন হও’ (মায়েদাহ ৫/২৩)। তিনি আরো বলেন,‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেন’ (তালাক ৬২/৩)।
হালাল জীবিকা উপার্জনে শ্রেষ্ঠতম মানুষদের প্রচেষ্টা:
প্রথম মানব আদম (আ.) থেকে শুরু করে সকল যুগের শ্রেষ্ঠ মানবগণ হালাল জীবিকা উপার্জনে তৎপর ছিলেন। তাদের অনুসরণ করলে হালাল উপার্জনের প্রতি আমাদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে এবং হারাম উপার্জনের চিন্তা চেতনা বিদূরিত হবে। নবী-রাসূলগণ মানব জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তারা আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকেননি। বরং কাজ করেছেন। ঐ সমস্ত শ্রেষ্ঠ মানবদের জীবিকা উপার্জনের কিছু দিক এখানে তুলে ধরা হ’ল, যা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আমাদের কর্মজীবনে তা বাস্তবায়ন করতে পারি।
নবী-রাসূলগণ:
আদম (আ.) : মানব জাতির আদি পিতা আদম (আ.) ছিলেন একজন কৃষক। যিনি জমিতে ফসল ফলাতেন এবং নিজ হাতে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরী করতেন। আর এ কাজে তাঁর স্ত্রীও সাহায্য করতেন। তিনি একজন রাজ মিস্ত্রীও ছিলেন।
দাউদ (আঃ):
রাসূলু্ল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর নবী দাঊদ (আঃ) নিজ হাতে উপার্জন করে খেতেন’।
ইবনু আববাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত আছে যে, ‘দাঊদ (আঃ) ছিলেন বর্ম নির্মাতা, আদম (আঃ) ছিলেন কৃষক, নূহ (আঃ) ছিলেন কাঠ মিস্ত্রী, ইদ্রীস (আঃ) ছিলেন দর্জি, মূসা (আঃ) ছিলেন রাখাল’।
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যাকারিয়া (আঃ) ছিলেন কাঠ মিস্ত্রী।
ইদ্রীস (আঃ) : সর্বপ্রথম ইদ্রীস (আঃ) প্রথম ব্যক্তি যিনি সুতার তৈরী সেলাইযুক্ত পোষাক তৈরী করেন।
নূহ (আঃ) : নূহ (আঃ) নিজ কওমের ছাগল চরাতেন। তিনি কাঠ মিস্ত্রীও ছিলেন। তিনি প্লাবনের পূর্বে স্বহস্তে কাঠের নৌকা তৈরী করেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন‘সে নৌকা নির্মাণ করতে লাগল, আর যখনই তার কওমের প্রধানদের কোন দল তার নিকট দিয়ে গমন করত, তখনই তার সাথে উপহাস করত’ (হূদ ১১/৩৮)।
ইউসুফ (আঃ) : ইউসুফ (আঃ) ছিলেন মিসরের অর্থমন্ত্রী। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বলেন, ‘ইউসুফ বলল, আপনি আমাকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। নিশ্চয়ই আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও (এ বিষয়ে) বিজ্ঞ’ (ইউসুফ ১২/৫৫)।
মূসা (আঃ) : মূসার দৈহিক শক্তি ও আমানতদারিতার কারণে আট বা দশ বছর শো‘আয়েব (আঃ)-এর ছাগল চরানোর বিনিময়ে তার কন্যাকে বিবাহ করেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই কর্মচারী হিসাবে উত্তম হবে সে ব্যক্তি, যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত’।
হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ) : আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) কয়েক কীরাতের বিনিময়ে মক্কাবাসীর ছাগল চরাতেন। এ বিষয়ে আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি, যিনি বকরী চরাননি। তখন তাঁর ছাহাবীগণ বলেন, আপনিও? তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি কয়েক কীরাতের (মুদ্রা) বিনিময়ে মক্কাবাসীদের ছাগল চরাতাম’।
খোলাফায়ে রাশেদীন :
(১) আবুবকর (রাঃ) : আবুবকর ছিদ্দীক (রাঃ) ছিলেন জাহেলী যুগ থেকেই একজন সৎ ব্যবসায়ী। কুরাইশদের মধ্যে তিনি ছিলেন ধনাঢ্য ব্যক্তি। ইসলাম কবুল করার পর তার সম্পদ গোলাম আযাদ ও ইসলাম প্রচারের কাজে ব্যয় করেন। কিন্তু যখন তিনি খলীফা নিযুক্ত হন, তখনও কাপড় নিয়ে বাজারে বিক্রির জন্য বের হন। পরে ওমর ও আবু ওবায়দার পরামর্শক্রমে ভাতা নির্ধারণ করলে তা থেকে সংসার চালান।
(২) ওমর ফারূক (রাঃ) : ওমর (রাঃ) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। এর মাধ্যমে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন।
(৩) ওছমান (রাঃ) : ওছমান (রাঃ) জাহেলী যুগে ও ইসলামী যুগে কাপড় বিক্রয় করতেন এবং এর মাধ্যমে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন।[20]
(৪) আলী (রাঃ) : আলী (রাঃ) নিজ হাতে কাজ করতেন। তিনি খেজুরের বিনিময়ে কুপ থেকে পানি তুলে অন্যের জমিতে সেচ দিতেন। তার কষ্ট এমন পর্যায়ে পৌঁছতো যে হাতে রশির দাগ পড়ে যেত।
অন্যান্য ছাহাবী :
খাববাব ইবনে আরত ছিলেন কর্মকার, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসূদ (রাঃ) ছিলেন রাখাল, সা‘দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) তীর প্রস্ত্ততকারী ছিলেন, জোবায়ের ইবনে আওয়াম দর্জী, বেলাল ইবনে রাবাহ ও আম্মার ইবনে ইয়াসির গোলাম ছিলেন। সালমান ফারসী ক্ষুরকার ও খেজুর গাছে পরাগায়নের কাজ করতেন। বারা ইবনে আযেব ও যায়েদ বিন আরকাম ছিলেন ব্যবসায়ী।
উপরোক্ত মহান ব্যক্তিদের কর্মজীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা কি হালাল জীবিকা গ্রহণ করতে পারি না? যাতে আমাদের জীবন হবে কল্যাণকর। আর যাবতীয় হারাম জীবিকা ও হারাম উপার্জন, যেমন সূদী কারবার ও সূদের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চাকরী করা, ওযনে কম দেওয়া ইত্যাদি হারাম ও নিষিদ্ধ কর্ম হ’তে বিরত থাকা যরূরী। কারণ পরকালে আল্লাহ মানুষের উপার্জিত সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন ‘তার সম্পদ সম্পর্কে (জিজ্ঞেস করা হবে) সে কোথা থেকে উপার্জন করেছে ও কোথায় ব্যয় করেছে’। আর হারাম উপায়ে উপার্জিত সম্পদ খেলে জাহান্নামে যেতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না’।
অতএব মহান আল্লাহ আমাদের হালাল জীবিকার উপর সন্তুষ্ট থাকার তাওফীক দান করুন-আমীন!