
৫ই আগষ্ট ২০২৪
*শেখ হাসিনার হাতেই আওয়ামী লীগের কফিন ও পারিবারিকভাবে দাফন*
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ধারক যে দল সেই দলের কফিনটা হাসিনা তার বোনকে সাথে করে দেশ থেকে নিয়ে গেল আজকে। ফেলে গেল তার দলের নেতা কর্মীদের জ্বলন্ত অগ্নিগুহার মধ্যে।
শেখ হাসিনা বুজতেই পারে নাই যে একটা কোটা সংস্কার আন্দোলন কিভাবে তার পতন ডেকে আনতে পারে। যখন ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে জননেত্রী জনগণ থেকে বিচ্চু্ত হয়ে শ্বৈরশাসক হয়ে যায় এবং তার স্বৈরাচারীতা অতীতের সকল স্বৈরাচারকে পিছনে ফেলে, কখন যে সে তার পতন ডেকে আনলো তা বুজতেই পারে নাই। যখন বুজলো ততক্ষনে ট্রেন চলে গেছে। যে সরকার ২০১৮ সালেই কোটা সংস্কার বা বিলুপ্ত করেছিল কিন্তু অতীতের অন্য কোন দুঃশাসনের অংশ হিসাবে কোন একটা বদমতলব নিয়ে তারই দলের একজনকে দিয়ে হাইকোর্টে রিট করিয়ে ভবিষ্যতে কোন উদ্দেশ্য হাসিলের মতলব এটে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিল এবং যেন কোন ব্যাপার না মনে করে তুচ্ছতাচ্ছিলের মধ্যে বিভিন্ন কুট চাল দিয়ে সমাধান দিচ্ছিল, হাসিনার সেই বিরক্তির কোটাই হাসিনাকে কৌটা বানিয়ে দিল। হাসিনা পাত্তাই দিলো না যখন ছাত্ররা দাবী সুসংগঠিত করতেছিল। দীর্ঘদিনের অগণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন ও দঃশাসনের সমাপ্তি এভাবেই হয়। অন্য দশটা আন্দোলন বা দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক আন্দোলন অতীতে যেভাবে দমন পীড়ন করেছে তারই একটা ট্রেইলার হাসিনা এখানেও করতে চেয়েছিল। ছাত্রদেরকে বিচার বিভাগের মূলা সামনে ঝুলিয়ে ইমরান, লাকী গংদের মত সায়েস্তা করতে চেয়েছিল। কিন্তু এই জেড জেনারেশনকে বুজতেই পারে নাই। তার ছাত্র সংগঠনেও তো একই জেনেরেশনের কর্মী ছিল কিন্তু তাদের তো বিকশিত হবার সুযোগ দেয় নাই, বুজবে কিভাবে? স্বাধীনতার জেনেরেশনের চাটুকারদের দ্বারা বেস্টিত হয়ে চারিদিকে শুধু নিজের জয়গানই শুনতে পাচ্ছিল। সুবিধাভোগীরা আসে- যায় এবং এই আসা-যাওয়ার মধ্যে নিত্যনুতন চাটুকারীতাতে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল জননেত্রী ভোট চোর হ্ত্যাকারী শেখ হাসিনা। কি তার দম্ভ কি তার কথাবার্তা! তার একটা বেফাঁস কথা সমগ্র জাতিকে টগবগে করে তুলে তাকে তার গংসহ ঝাটাপিটা করে বিদায় করে দিল।
হাসিনা তার আন্দোলনের সমস্ত অভিজ্ঞতাকে চাটুবাজদের দ্বারা ব্রেইনওয়াস্ড যে হয়ে গিয়েছিল, তা এই মুর্খ হাসিনা বুজতেই পারে নাই। হাসিনা নিজেই তো দুটো সরকারের পতনের বড় অংশীদার ছিল। হাসিনা কতবার ক্ষমতায়নের জন্য ভাওতাবাজী করেছিল এদেশে? এবার সেই ভাওতাবাজীগুলো সুদেআসলে ফেরত পেল।
হাসিনার দুঃশাসন আর দুর্নীতি নিয়ে লেখার কোন শেষ হবে না কিন্তু এগুলো যেহেতু পর্যায়ক্রমে প্রমানিদসহ উঠে আসবে তাই এগুলো নিয়ে পরে লিখা হবে।
কি নির্লজ্য এই হাসিনা। ৮০ বছরের একজন যুবতী হাসিনা এখনও তার নিজের ভবিষ্যত ও জীবনের জন্য কত সাধনাকারী। নিজের দলের নেতা-কর্মীদেরকে বাঁচানোর কোন চেষ্টাই করলো না। এদেশের সাধারন আওয়ামী লীগ সাপোর্টারদেরকে বিলীন করে দিয়ে গেল। রাজাকার ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতারা যেমন বলতেই পারে না আমি রাজাকার বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করি সেরকম আওয়ামী লীগের সাপোর্টারও হয়তো কোনদিন আর বলতে পারবে না যে তারা আওয়ামী লীগ করে। ক্ষমতার লোভে জোড় করে অনেককে যুদ্ধঅপরাধী বানিয়ে ফাঁসি দেয়া, শতশত অংগ সংগঠন তৈরী করা, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা (অজ্স্র কুকর্মের মধ্যে) তার জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়ালো।
শেখ মুজিবের স্বপ্নের কথা বলে মুখে যে পরিমান ফেনা হাসিনা ও আওয়ামী লীগেরা গত ১৬ বছরে মুখে তুলেছে সেই জাতীর পিতার সংগঠনকে তারচেয়ে কয়েক লক্ষগুন থুতুর খাওয়ার ব্যবস্হা হাসিনা করে গেল। হাসিনা তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কি তার প্রমান কি রেখে গেল না? বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়দলকে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দুই জেনেরেশনের মধ্যে নিজ হাতে দাফন করে দিল। অবশ্য সে তার স্বপ্নপুরন করেছে। কারন বঙ্গবন্ধুর সংগঠন পরিবারের হাত থেকে কেন অন্যহাতে যাবে? শেখ মুজিবের রাজনৈতিক দলের কফিন তার সুযোগ্য কন্যাদ্বয় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সাথে করে ৫ই আগষ্ট ২০২৪ এ মর্যাদার সহিত আগরতলা নিয়ে গেল। যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাকে মিথ্যাচার করে শেখ মুজিব নেতা হয়েছিল সেই আগরতলাতেই কফিনটা নামলো তারই সুযোগ্য কন্যাদ্বয়। হয়তো দাফন করার জন্য এক-দুই দিন অপেক্ষা করবে বঙ্গব্ধুর ভাতিজা ভাগ্নদের জন্য। নিয়তী কি এক খেলা দেখালো অর্ধ শতাব্দীর বেশী সময়ের পর।
স্বাধীনতা যুদ্ধ যে পৈত্রিক সম্পত্তি না তা হয়তো কোন এক শেখ পরিবারের সাহেব বা সাহেবান আবার অশ্রু নয়নে জাতির সামনে বলে ক্ষমা প্রার্থনা করবে কিন্তু জেড এর পর তো এ-জেনেরেশন আসবে। তারা তো আরও ক্ষমা করবে না।
ঈদ মুবারক নুতন বাংলাদেশ।
আমাদের দেশের সকল জেড জেনেরেশনকে টুপি খোলা সেলুট।
লেখক-
মাহফুজুল আরিফ।