মানুষ বলছে, এই সরকার আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার দরকার’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এরকম বক্তব্যে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাইফুল হক।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লা্বের সামনে এক সভায় বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক এই প্রশ্ন তুলেন।
তিনি বলেন গতকালকে আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তিনি ঢাকার বাইরে এক সমাবেশে বলেছেন… তার কথা… মানুষ নাকি বলছে, এই সরকারকে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার দরকার।
আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে চাই, আপনি কি সরকারের মনের কথাটাই আপনার মুখ দিয়ে আপনি উচ্চারণ করলেন? আসলে আপনাদের মতলবটা কি? উদ্দেশ্যটা কি?”
সাইফুল হক বলেন, ‘‘ আপনার(সরকার) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তিনি যদি আগামী পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলেন জনগনের দোহাই দিয়ে… সরকারের উদ্দেশ্যে নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। আপনাদের ভিন্ন কোনো এজেন্ডা আছে কিনা, নতুন করে এজেন্ডা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
সরকারের মনে কথাটা যদি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উচ্চারণ করে থাকেন সরকারের উচিত হবে দেশবাসীকে কথাটা পরিস্কার করে বলা।
উপদেষ্টাকে সতর্ক করুন’
সাইফুল হক বলেন, ‘‘ সরকারকে বলতে চাই, অতিকথন বন্ধ করুন, বাড়িয়ে কথা বলা বন্ধ করুন। মানুষের নাম করে আপনারা যা করছেন তাতে সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভুলবুঝাবুঝি তৈরি হবে, অবিশ্বাসের জায়গাটা বাড়বে। তাতে আমরা যেটুকু অর্জন করতে পারতাম সে অর্জন কিন্তু বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুনকে আপনার উপদেষ্টাকে সর্তক করুন। যারা সর্তক সর্তক হবেন না প্রয়োজন বোধে তাদেরকে বরখাস্ত করুন। নতুন দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গকে দায়িত্ব দিন।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবিও জানান বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিপ্লবী যুব সংহতির উদ্যোগে ‘গাজায় গণহত্যা বন্ধ কর এবং ফিলিস্তিন দখলমুক্ত কর, গণহত্যাকারী নেতানিয়ানু চক্রের বিচার কর’ দাবিতে এই সংহতি মানবন্ধন হয়।
‘ফিলিস্তিনিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে’
সাইফুল হক বলেন, ‘‘ এই লড়াই যতদিন ফিলিস্তিন মুক্ত না হবে ততদিন বাংলাদেশের মানুষ আমরা ফিলিস্তিনের রক্তের দায় পরিশোধ করার জন্য ফিলিস্তিনের পক্ষে আমরা আছি। আমরা অবিলম্বে এই গণহত্যা বন্ধের দাবি জানাই, অবিলম্বে আগ্রাসন-দখলদারিত্ব বন্ধের আমরা দাবি জানাই।”
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বে যে জনমত গড়ে উঠেছে, সেই জনমতকে বাংলাদেশের ১৮ কোটি তাদের সাথে মিলে আমরা ইজরায়েলকে বাধ্য করতে চাই, এদেরকে আমরা আত্মসমপর্ণ করতে চাই।
‘ভারতের সাথে সকল চুক্তি পর্যালোচনা দরকার’
সাইফুল হক বলেন, ‘‘ দুইদিন আগে দেখলাম, ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি এককভাবে ভারত বন্ধ করতে পারে না। এটা ভারতের কোনো স প্রতিবেশির পরিচয় নয়, এটা বন্ধুত্বের কোনো নমুনা নয়।
আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, এভাবে আপনারা কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল করতে পারেন না। আমি বাংলাদেশ সরকারকে বলতে চাই, আমাদের বাগেরহাটের যে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প যেটা ভারতের স্বার্খে নেয়া হয়েছিলো …এরকম অনেকগুলো প্রকল্প এগুলো অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত যাবতীয় দেশবিরোধী, নিরাপত্তা বিরোধী চুক্তিগুলো প্রকা্শ করা দরকার, পর্যালোচনা করা দরকার, যেগুলো জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি সেগুলো বাতিল করা দরকার।
তিনি বলেন, ‘‘ ভারতের সাথে আলাপ-আলোচনা করে আমরা আমাদের যাবতীয় দ্বি-পাক্ষিক সমস্যার সমাধান করতে চাই। সমতা, ন্যায্যতা, সমঅংশীদারিত্বের ভিত্তিতে, মর্যাদার ভিত্তিতে ভারতের সাথে আমরা আমাদের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে চাই।”
পরিস্কার করে বলতে চাই, ভারত যদি হাসিনার ফ্যাসীবাদ জমানার মতো ক্লায়েন্ট স্টেট করে রাখতে চান, যদি মনে করেন যে, অনুগত রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে… এই চেতনা থেকে বেরিয়ে আসুন। আটমাস পার হয়েছে এখনো পর্যন্ত অভ্যুথানের পর যে নতুন বাংলাদেশ, আমাদের যে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ভারতের নীতিনিরধারকেররা এখনো এটা থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহন করেননি
সাইফুল হক বলেন, ‘‘ আমরা ভারতকে বলতে চাই, হাসিনার চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখলে আপনারা ভুল করবেন। কোনো দল নয় এদেশের জনগনের সাথে সম্পর্করা তৈরি করুন।দিল্লীর সাউথ ব্লক নীতিনির্ধারকদের বলতে চাই, বাংলাদেশের বিশেষ কোনো দলের সঙ্গে নয়, এদেশের জনগন তাদের সাথে সম্পর্কটা তৈরি করুন।”
আমরা সৎ প্রতিবেশির মতো বসবাস করতে চাই। আপনারা যদি আমাদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেন তাহলে এই অঞ্চল কিন্তু অস্থিতিশীল হতেই থাকবে