সিন্ডিকেট না থাকলে দেড় লাখ টাকায় মালয়েশিয়
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে বায়রার প্রতিনিধিদল।
সিন্ডিকেট না থাকলে দেড় লাখ টাকায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো সম্ভব বলে মনে করেন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। এজন্য সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উম্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা ও সচিব বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) প্রতিনিধিদল। বিশেষ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ৪৫৩ জন এজেন্সী মালিকের স্বাক্ষর সম্বলিত তালিকাও স্মারকলিপির সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
বায়রার সিনিয়র সদস্য খন্দকার আবু আশফাকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে নানা সমস্যা ও সম্ভবনার তথ্য তুলে ধরেন। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বায়রার সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজুল ইসলাম, নোমান চৌধুরী ও বায়রা নেতা ফখরুল ইসলাম। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নেয়ামত উল্যা ভুঁইয়া স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
ব্যবসায়ী নেতারা দাবি করেন, সিন্ডিকেট ভাঙ্গা গেলে মালয়েশিয়াতে মাত্র দেড় লাখ টাকায় শ্রমিক পাঠানো সম্ভব। কিন্তু সিন্ডিকেট নিয়ে গত এক দশকে বড় কেলেঙ্কারি হলেও সেটা ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি। যখনই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সম্ভাবনা দেখা দেয়, চুক্তি হয়, তখনই ওই সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়। সাবেক সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, পুরনো সিন্ডিকেট নতুন কায়দায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের এতে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে। শ্রমবাজারে এসব সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকায় মালয়েশিয়া যেতে প্রত্যেক কর্মীকে বাধ্যতামূলক অতিরিক্ত এক লাখ ৫২ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
মালয়েশিয়া শ্রমবাজারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও টাকা পাচার নিয়ে দুদক ও সিআইডিতে মামলা চলমান। কিন্তু ৫ই আগষ্টের পর থেকে পলাতক থাকা সেই রুহুল আমিন স্বপন ও তার সহযোগীরা তাদের মালয়েশিয়ান পার্টনার দাতোশ্রী আমিন আবারও সিন্ডিকেট গড়তে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান নাগরিক দাতোশ্রী আমিনের মালয়েশিয়ান আইটি কোম্পানী বেসটিনেট মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে বার হাজার তিনশত কোটি চার লাখ টাকা। এ সিন্ডিকেটের দরুন চূড়ান্তভাবে বহির্গমন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও ১৭ হাজার কর্মীসহ মোট ৫০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেনি।
সরকার অনুমোদিত প্রায় দুই হাজার ৫০০ এজেন্সির মধ্যে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে ১০টি এজেন্সী ও ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১০০ এজেন্সি নিয়ে বিশেষ সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন বায়রা নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, উন্মুক্ত রিক্রুটমেন্ট হলে কাউকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে না। এতে কর্মীরা কম খরচে বিদেশ যেতে পারবেন। সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সী যার যার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতার ভিত্তিতে কর্মী পাঠাতে পারবে। এমন ব্যবস্থা হলে বার বার শ্রম বাজার বন্ধ হবে না এবং কম সময়ে বেশি লোক যেতে পারবে।